ইরানে রহস্যজনক হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় দেশটির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুুল্লাহিয়ানসহ নয় আরোহীই নিহত হয়েছেন। খারাপ আবহাওয়ার কথা বলা হলেও হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার সঠিক কারণ জানা যায়নি। ইরান-ইসরায়েল টানটান উত্তেজনার মধ্যে এ দুর্ঘটনা ঘিরে তৈরি হয়েছে রহস্যের জাল।বেল-২১২ মডেলের হেলিকপ্টারটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি। দুর্ঘটনার পেছনে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের হাত আছে কি না, তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।

এদিকে, রাইসির মৃত্যুর পর ইরানের ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ইরানের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী আলি বাঘেরি কানি। ফলে তার আগের পদ উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদটি এখন খালি হয়েছে। ইরানের রাষ্ট্রদূত এবং নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরের স্থায়ী প্রতিনিধি আমির সাঈদ ইরাভানিকে ওই পদে সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে অনানুষ্ঠানিক প্রতিবেদনগুলোতে তুলে ধরা হচ্ছে।নিহত পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে এখনও সমাহিত করা হয়নি এমন সময়ে তার নিয়োগ এবং প্রকাশ্য ঘোষণা গুরুত্বপূর্ণ মনে না হলেও সম্ভবত এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর মধ্যে একটি যার উপর পশ্চিমারা নজর রাখছে। একজন অভিজ্ঞ কূটনৈতিক হিসেবে পরিচিত, ইংরেজিতে সাবলীল, আলোচনার শিষ্টাচারের সাথে পরিচিত এবং অতীতে সফল আলোচনা জড়িত ইরাভানির ভূমিকা ভবিষ্যতের আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

দুই সপ্তাহের মধ্যেই আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার বোর্ড অব গভর্নরস পরবর্তী বৈঠকের প্রস্তুতি নিতে যাচ্ছে। ফলে ইরানের পারমাণবিক ইস্যুতে আলোচনাকারীর শূন্য আসনের দিকে নজর এখন আরও তীব্র হবে। 

ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনা ব্যাপক জল্পনা-কল্পনার জন্ম দিয়েছে। অনাকাক্সিক্ষত এ দুর্ঘটনা ঘিরে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। প্রেসিডেন্টের মৃত্যুতে ইরানজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এ ঘটনায় অনিশ্চয়তার কালো মেঘে ছেয়ে গেছে ইরান, যার প্রভাব মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট রাইসির মৃত্যু কেবল ইরানের অভ্যন্তরীণ ক্ষমতার দ্বন্দ্বের সূত্রপাতই করবে না, বরং ওই অঞ্চলেও তাৎপর্যপূর্ণ নানা বিষয়ে প্রভাব ফেলতে পারে। চলমান বৈশ্বিক উত্তেজনা আর সংঘাতের মাঝে রাইসির মতো দাপুটে রাজনৈতিক নেতার অনুপস্থিতি ইরানের ভিতরে এবং বাইরে ক্ষমতার ভারসাম্যে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

সূত্র : বিবিসি।