দীর্ঘ ৪১ বছরের কর্মময় জীবন শেষে ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়ে মসজিদের ইমামকে বিদায় জানালেন গ্রামবাসী। হাতে তুলে দিলেন নগদ পৌনে এক লাখ টাকা এবং উপহার সামগ্রী। শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে ব্যতিক্রমী ঘটনাটি ঘটেছে নাটোরের বাগাতিপাড়ার ক্ষিদ্রমালঞ্চি গ্রামে। বিদায়ী ইমাম মো. মুনসুর আলী পার্শ্ববর্তী শ্রীরামপুর গ্রামের বাসিন্দা। স্থানীয়রা জানান, ক্ষিদ্রমালঞ্চি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম মো. মুনসুর আলী ১৯৮৩ সালে ইমামের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। একই মসজিদে দীর্ঘ ৪১ বছর দায়িত্ব পালনের পর বয়সজনিত কারণে তিনি অবসর নেন। প্রিয় ইমামের অবসরজনিত বিদায় জানাতে গ্রামবাসীরা ওই মসজিদে বিদায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে মসজিদ কমিটির সভাপতি আরশেদ আলীর সভাপতিত্বে এবং আব্দুল হালিমের পরিচালনায় ইমাম মুনসুর আলীর কর্মময় জীবনের ওপর আলোকপাত করে বক্তব্য দেন মসলেম উদ্দিন, আলাউদ্দিন, আসমত আলী, সেলিম রেজা, আব্দুল আজিজ, সাইদুর রহমান প্রমুখ। শেষে ওই মসজিদসহ আশেপাশের ৫ মসজিদের অধীনের গ্রামবাসীরা পৌনে এক লাখ টাকা ও উপহার সামগ্রী প্রদান করেন। এছাড়াও ইমামের বিদায় উপলক্ষে মসজিদে উপস্থিত মুসুল্লিদের মধ্যাহ্ন ভোজের আয়োজন করা হয়। শেষে ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়ে পুরো এলাকা ঘুরিয়ে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয় ইমাম মুনসুর আলীকে। এসময় গ্রামের নারী-পুরুষরা রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে বিদায় জানান প্রিয় ইমামকে। ব্যক্তিগত জীবনে মুনসুর আলী ৩ কন্যা ও ২ ছেলের পিতা। এ বিষয়ে মসজিদ কমিটির সভাপতি আরশেদ আলী বলেন, অন্যান্য চাকরি শেষে চাকুরিজীবীদের জাঁকজমক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিদায় দেওয়া হয়। তাছাড়াও তারা পেনশন পান। কিন্তু মসজিদের ইমামের বিদায়ে তা করা হয় না। এ কারণেই গ্রামবাসীদের সহযোগিতায় ইমামের বিদায়ে এই আয়োজন করা হয়েছে। বিদায়ী ইমাম মো. মুনসুর আলী বলেন, জীবনের শুরুতে সাবরেজিস্ট্রি অফিসের মুহুরীর কাজ শুরু করেছিলেন। কিন্তু দুই-তিন দিন পর ভালো না লাগায় সেকাজ ছেড়ে এসে এই মসজিদে ইমামতি শুরু করেন। দীর্ঘদিন পর অবসর নেওয়ায় গ্রামবাসীর এমন বিদায়ে তিনি মুগ্ধ। তবে তিনি কুরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী জীবন গড়া এবং ইমান ও আমলের ওপর জীবনকে পরিচালিত করার আহবান জানান।