গাজা উপত্যকা এবং পশ্চিম তীরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের আহ্বান জানিয়েছে আরব লীগ। ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকটের অবসানে দ্বি-রাষ্ট্র তত্ত্ব বাস্তবায়িত না হওয়া পর্যন্ত ইসরায়েলি বর্বরতায় ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়া গাজা ও পশ্চিম তীরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের পাশাপাশি এ নিয়ে রাজনৈতিক প্রক্রিয়া অবলম্বনের একটি সীমারেখা বেধে দেয়ার জন্যেও নিরাপত্তা পরিষদকে বৃহস্পতিবার আহবান জানিয়েছে আরব লীগ। 

উল্লেখ্য, ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের মধ্যেকার দ্বন্দ্ব-সংঘাত ঘিরে এর আগেও কূটনীতিকরা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী নিয়োগের কথা বলেছেন। কিন্তু এবারই প্রথম আরব লীগের মত একটি বহুজাতিক সংস্থার পক্ষ থেকে লিখিতাকারে জাতিসংঘ সমীপে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানানো হলো বলে মহাসচিবের উপ-মুখপাত্র ফারহান হক জানান। 
প্রসঙ্গত: উল্লেখ্য যে, গাজা এবং পশ্চিম তীরে শান্তিরক্ষী নিয়োগের এ অনুরোধ কতটা কার্যকর হবে তা নিয়ে রয়েছে সংশয়। কারণ, নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদন ব্যতিত দ্বন্দ্ব-সংঘাতপূর্ণ কোন এলাকাতেই শান্তিরক্ষী প্রেরণ করা যায় না। এছাড়া, শান্তিরক্ষীরা কখনোই যুদ্ধরত অঞ্চলে প্রবেশ করে না কিংবা নিজেরা যুদ্ধেও লিপ্ত হয় না। এ অবস্থায় হামাস ও ইসরায়েল উভয়কেই সম্মত হতে হবে সেখানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী প্রেরণের ব্যাপারে। ফারহান হক বলেন, প্রথমে সেখানে শান্তি বজায় রাখতে হবে। কারণ আমরা কখনো যুদ্ধ চলছে এমন রণাঙ্গনে যাই না। সংঘাতরত পক্ষসমূহকে সেখানে শান্তিরক্ষীদের উপস্থিতির সম্মতি দিতে হবে। আমরা কখনো শত্রুবাহিনী বা দখলদার বাহিনী হিসেবে কোথাও যাই না।
গাজায় যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে বাহরাইনের মানামায় বৃহস্প্রতিবার ২২ সদস্য বিশিষ্ট আরব লীগের সম্মেলনে গৃহিত সিদ্ধান্তের আলোকে প্রদত্ত বিবৃতির পরই জাতিসংঘ সমীপে উপরোক্ত অনুরোধ জানানো হয়। 
নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে ফারহান হক আরো বলেন, শান্তিরক্ষী মোতায়েনের অনুরোধের সাথে আরব লীগের পক্ষ থেকে একটি সম্মেলন আহবানের অনুরোধ জানানো হয়েছে যুদ্ধ বিরতির মধ্যদিয়ে ঐ অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার অভিপ্রায়ে। তবে সেই সম্মেলন কীভাবে কোথায় করা উচিত তা নিয়ে এখনও আলোচনা হয়নি। 

আরব লীগের এ অনুরোধে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তথা বাইডেন প্রশাসনের সাপোর্ট থাকবে কিনা জানতে চাইলে বৃহস্পতিবার স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র বেদান্ত পাটেল সাংবাদিকদের জানান, অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েনের ফলে হামাস নিধনে ইসরায়েলের অভিযানের সাথে আপসকামিতা হতে পারে। 

আলব লীগের এই সম্মেলনে বক্তব্যকালে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেজ বলেছেন, দ্বি-রাষ্ট্র তত্ত্ব বাস্তবায়নই কেবলমাত্র চলমান দ্বন্দ্ব-সংঘাতের স্থায়ী অবসান ঘটাতে পারে। মহাসচিব উল্লেখ করেছেন, গাজা যুদ্ধকে চলতে দেয়ার অর্থ হবে পুরো অঞ্চলে তা ছড়িয়ে পড়ার হুমকি। ৭ অক্টোবর হামাস কর্তৃক ইসরায়েলিদের ওপর আক্রমণ অথবা গণহারে ফিলিস্তিনিদের শাস্তি প্রদান, কোনটিই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।