সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বর্তমানে একটি নামের জন্য সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। আর সেই নামটি হলো স্টর্মি ড্যানিয়েলস। তার সাথে করা যৌন সম্পর্কের খবর গোপন রাখতে গিয়েই বিপদে পড়েছেন ট্রাম্প। 

স্টর্মি ড্যানিয়েলস জানিয়েছিলেন, ২০০৬ সালে ট্রাম্প তাকে বলেছিলেন ‘ট্রেইলার পার্ক’ থেকে বেরোতে চাইলে তাঁর (ট্রাম্প) সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করতেই হবে। সেই ঘটনার প্রায় দুই দশক পর তিনি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। আর সেই সাক্ষীতেই ফেঁসে গেছেন ট্রাম্প। প্রথমবারের মতো সাবেক কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার রেকর্ড গড়েছেন ট্রাম্প।বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কের ম্যানহাটানের ডিস্ট্রিক্ট আদালতের বিচারকেরা ট্রাম্পকে ব্যবসাসংক্রান্ত নথিতে মিথ্যা ঘোষণা দেওয়ার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেন। ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ট্রাম্প তার সাবেক আইনজীবী মাইকেল কোহেনের মাধ্যমে স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার দেন এক দশক আগের ওই যৌন সম্পর্কের বিষয়ে মুখ না খুলতে। সেই তথ্য ট্রাম্প তার ব্যবসায়িক নথিতে গোপন করেছেন।

এবার জেনে নেয়া যাক ট্রাম্পকে বিপাকে ফেলা কে এই স্টর্মি ড্যানিয়েলস। তার প্রকৃত নাম স্টেফানি ক্লিফোর্ড। লুইজিয়ানা অঙ্গরাজ্যে মায়ের কাছেই তিনি বড় হয়েছেন তিনি। স্বল্প আয়েই মায়ের সংসারে তার শৈশব কেটেছে।

ড্যানিয়েলস হাইস্কুল শেষ করার সময় সবচেয়ে ভালো ফল করা ১০ শতাংশ শিক্ষার্থীর মধ্যে ছিলেন তিনি। স্কুলের সংবাদপত্রও সম্পাদনা করেছেন। টেক্সাসের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পশুর ওষুধ নিয়ে পড়াশোনারও সুযোগ পেয়েছিলেন স্টর্মি। তবে পড়াশোনা তিনি চালিয়ে যাননি।

স্টর্মি জানিয়েছেন, নিজের খরচ মেটাতে ১৭ বছর বয়সেই সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বিভিন্ন জায়গায় নাচতেন তিনি। পরবর্তীতে নগ্ন মডেলিং ও পর্নো ছবিতে অভিনয় শুরু করেন তিনি। ড্যানিয়েলস বলেছেন, তিনি তাৎর সময়ে সবচেয়ে কম বয়সী পর্নো ছবির পরিচালকগুলোর একজন ছিলেন। অনেকগুলো পুরস্কারও পেয়েছিলেন। টেলিভিশন শোতে বিভিন্ন চরিত্রে এবং ‘দ্য ফোরটি-ইয়ার-ওল্ড ভার্জিন’ এবং ‘নকড আপ’-এর মতো ছবিতে অভিনয় করেছেন।

পর্নো দুনিয়া ছেড়ে স্টর্মি বেশ কয়েকটি সফল সিনেমার স্ক্রিপ্ট লিখেছেন এবং পরিচালনা করেছেন। অবসরে ঘোড়া চড়ে সময় কাটাতেন। মেয়েকে বড় করেছেন।

২০১৮ সালে তাকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে  ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল। স্টর্মির দাবি এই প্রতিবেদনই ফের তার জীবন ওলটপালট করে দেয়, শুরু হয় ‘বিশৃঙ্খলা’। তার অভিযোগ, ওই প্রতিবেদন তার ব্যক্তিগত অনেক বিষয় সামনে নিয়ে আসে। এই প্রতিবেদনেই ট্রাম্পের সঙ্গে ড্যানিয়েলসের সাক্ষাতের বিষয়টি প্রথমবারের মতো জনসমক্ষে আসে।

ট্রাম্পের আইনজীবীদের অভিযোগ, ড্যানিয়েলস ওয়ালস্ট্রিটের প্রতিবেদনটি থেকে লাভবান হয়েছেন। এটা তার প্রচারের কাজ করেছে। ট্রাম্পের সঙ্গে ড্যানিয়েলসের সাক্ষাতের বিষয়টি বানানো। ওয়ালস্ট্রিটের ওই গল্পটিকে ড্যানিয়েলস অর্থ উপার্জনের উপায় হিসেবে ব্যবহার করেছেন।