‘যখন ওই বৃদ্ধ এক বড় নেতাকে হত্যা করতে চাইতেন, তখন তিনি সবচেয়ে সাহসী তরুণদের বেছে নিতেন। তিনি তাদের এই বলে হত্যা অভিযানে পাঠাতেন যে, যদি তারা মারতে পারে তাহলে তারা বেহেশতে জায়গা পাবে।’
ইতালীয় অভিযাত্রী মার্কো পোলো তার বই ‘বুক অব ওয়ান্ডার্সে’ এমন এক মুসলিম গোষ্ঠীর কথা উল্লেখ করেছেন যারা মধ্যপ্রাচ্যে খ্রিষ্টান ও মুসলমানদের ওপর, বিশেষ করে যারা ইসলামের নবী মুহাম্মদের অনুসারী, তাদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালাত।
এই দলটির নাম ছিল ‘হাসাসিনস’ বা ‘হাশশাশিন’। বলা হয়, ইংরেজি ‘অ্যাসাসিন’ শব্দটি এই দলের নাম থেকেই নেওয়া হয়েছে। যার অর্থ ‘খুনি’।
রাজনৈতিক বা ধর্মীয় কারণে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের হত্যা বা গুপ্তহত্যা করাকে ‘অ্যাসাসিনেশন’ বলা হয়। আর যারা সে কাজটা করে তাদের বলে ‘অ্যাসাসিন’।
শুরুতে ১১৯২ সালের ২৮শে এপ্রিলে টায়ার শহরে (বর্তমান লেবানন) হাসাসিনদের হামলার ঘটনা ঘটেছিল।
সে দিন ইতালির সম্ভ্রান্ত কনরাড অফ মনফেরাট জেরুজালেমের রাজা হওয়ার বা রাজ্যাভিষেকের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তিনি তৃতীয় ক্রুসেডের অন্যতম প্রধান নেতাও ছিলেন। কিন্তু সে দিন কোনও উৎসব হয়নি।
ইতিহাস অনুসারে, জেরুজালেমের রাজ্যাভিষেকের দিন দু’জন বার্তাবাহক কনরাড অফ মনফেরাটের কাছে একটি চিঠি নিয়ে পৌঁছান।
যখন তিনি ওই চিঠিটি পড়ছিলেন তখনই ওই দুই বার্তাবাহক ছুরি বের করে এবং তাকে ছুরিকাঘাত করে।
হামলাকারীদের কে বা কারা পাঠিয়েছিল সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে সে সময় এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল যে তারা হাসাসিনের সদস্য।
সময়ের সাথে সাথে ঔপন্যাসিক, চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং টেলিভিশন পরিচালকদের অনুপ্রাণিত করেছে এই হাসাসিন সম্প্রদায়।
সম্প্রতি বের হওয়া ‘অ্যাসাসিনস ক্রিড’ ভিডিও গেমটির নির্মাতারাও সে গল্প থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছেন।