সীমালঙ্ঘন থেকে বিরত থাকতে হবে। মহান আল্লাহ এবং রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সীমা লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে মুমিনদের সতর্ক থাকতে বলেছেন। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দীনের ব্যাপারে সূক্ষ্ম আত্মমর্যাদাবোধের অধিকারী ছিলেন। আল্লাহর নির্দেশিত বিধানের সামান্য বিচ্যুতিও তাঁর কাছে গ্রহণযোগ্য হতো না। আমাদের যাপিত জীবনেও সব ক্ষেত্রে আল্লাহর বিধান মেনে চলতে হবে। কোনো ক্ষেত্রেই যাতে সীমালঙ্ঘন না হয় সে ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। জীবনের সব ক্ষেত্রে এ শিক্ষা আরও বেশি করে রপ্ত করতে হবে।

হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, ‘রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কখনো দুটি কাজের মধ্যে কোনো একটি গ্রহণ করার এখতিয়ার দেওয়া হলে যদি তা গুনাহের পর্যায়ে না পড়ত তবে তিনি সহজতর কাজটি বেছে নিতেন। গুনাহের পর্যায়ে পড়লে তা থেকে সবার চেয়ে বেশি দূরে থাকতেন। তিনি কখনো ব্যক্তিগত আক্রোশের বশবর্তী হয়ে প্রতিশোধ গ্রহণ করেননি। কিন্তু আল্লাহর নির্ধারিত হুরমাত (সীমা) লঙ্ঘিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিলে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টিলাভের আশায় প্রতিশোধ গ্রহণ করতেন।’ আদাবুল মুফরাদ। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের কাছে হাজির হলেন। আমরা তখন তাকদির সম্পর্কে বিতর্কে লিপ্ত ছিলাম। এতে তিনি এতটা অসন্তুষ্ট হলেন যে, তাঁর চেহারা লাল হয়ে গেল। যেন তাঁর দুই গালে ডালিমের রস নিংড়ে দেওয়া হয়েছে। এরপর তিনি বলেন, এ কাজ করার জন্য কি তোমাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে অথবা এ উদ্দেশে কি আমি প্রেরিত হয়েছি? এ বিষয়ে বিতর্কে লিপ্ত হয়েই তোমাদের আগেকার লোকেরা ধ্বংস হয়েছে। আমি তোমাদের শপথ করে বলছি, সাবধান! এ বিষয় নিয়ে তোমরা আর কখনো বিতর্কে লিপ্ত হবে না।’ তিরমিজি। 

আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা) বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কেউ যেন তার স্ত্রীকে মসজিদে আসতে বাধা না দেয়। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.)-এর এক ছেলে বলল, আমরা অবশ্যই তাদের মসজিদে যেতে বাধা দেব। আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, আমি তোমাকে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিস বলছি, আর তুমি এ কথা বলছ! আবদুল্লাহ (রা.) ইন্তেকালের আগ পর্যন্ত তাঁর এ ছেলের সঙ্গে আর কথা বলেননি। মুসনাদে আহমাদ থেকে মিশকাত।

 আলী (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে বলা হয়েছে, ‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদল লোকের কাছ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তাদের মধ্যে এক ব্যক্তি হলুদ রঙের সুগন্ধি মেখেছিল। তিনি লোকদের প্রতি দৃষ্টিপাত করলেন, তাদের সালাম দিলেন, কিন্তু ওই ব্যক্তিকে উপেক্ষা করলেন। এ উপেক্ষার কারণ ওই ব্যক্তি যে সুগন্ধি ব্যবহার করেছিল তা ধর্মীয় বিধানে অনুমোদনযোগ্য নয়। জীবনের সব ক্ষেত্রে দীনি বিধান প্রতিষ্ঠায় রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নতকে অনুসরণ করতে হবে। আল্লাহ আমাদের সব ক্ষেত্রে দীনি বিধান প্রতিষ্ঠার তৌফিক দান করুন।