চলমান গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থনের জেরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন প্রশাসন থেকে এক কর্মকর্তা পদত্যাগ করেছেন। তার নাম লিলি গ্রিনবার্গ।
তিনি গাজা যুদ্ধের প্রতিবাদে প্রথম ইহুদি-আমেরিকান রাজনৈতিক কর্মকর্তা হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নিলেন। বুধবার ফিলিস্তিনিরা যখন ‘নাকবা’ দিবস পালন করছে, তখন তিনি পদত্যাগ করেন। তার অভিযোগ, বাইডেনের হাতে রক্তের দাগ আছে।
গ্রিনবার্গ মার্কিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিফ অব স্টাফের বিশেষ সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি বুধবার বিকালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব ডেবরা হাল্যান্ডের কাছে তার পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন।
তিনি তার চিঠিতে উল্লেখ করেন, “গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার প্রতি প্রেসিডেন্ট বাইডেনের অব্যাহত সমর্থনের মধ্যে এই প্রশাসনের প্রতিনিধিত্ব করা অব্যাহত রাখার বিবেকবুদ্ধি আর পাচ্ছি না।”
তিনি বলেন, “আমি আমার ইহুদি ঐতিহ্য থেকে যা শিখেছি, তা হল- প্রতিটি জীবনই অত্যন্ত মূল্যবান। যারা সহিংসংতা এবং নির্যাতনের শিকার হচ্ছে, তাদের পক্ষে দাঁড়ানো এবং অবিচারের মুখে কর্তৃপক্ষকে প্রশ্ন করা বাধ্যতামূলক।”
গ্রিনবার্গ এর আগে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের নির্বাচনী প্রচারণায় নিযুক্ত ছিলেন। পরে তিনি জো বাইডেনের নির্বাচনী প্রচারণায় যুক্ত হন।
পরে তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রাজনৈতিক নিযুক্তি লাভ করেন। তিনি এই চাকরিটি পেয়ে উল্লসিত হয়েছিলেন।
তিনি বলেন, “স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগদান করে আমি রোমাঞ্চ অনুভব করেছিলাম।”
কিন্তু গাজা যুদ্ধ এবং ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত সমর্থনে তার মধ্যে পরিবর্তন আসে।
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৩৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
তিনি বলেন, ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় তার নিজের সম্প্রদায়ের অনেকে প্রিয়জনকে হারিয়েছে, কিন্তু তার বদলে নিরীহ ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুত করা, দুর্ভিক্ষ, জাতিগত নির্মূলসহ সম্মিলিত শাস্তি দেওয়াটা যৌক্তিক নয়।
গ্রিনবার্গ মার্কিন প্রশাসন থেকে পদত্যাগ করা দ্বিতীয় কর্মকর্তা। গত সপ্তাহে মার্কিন প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা বিভাগ থেকে মেজর হ্যারিসন মান পদত্যাগ করেন। তিনিও গাজায় মার্কিন সমর্থনের প্রতিবাদে ওই সিদ্ধান্ত নেন। তিনিও ইউরোপিয়ান ইহুদি বংশোদ্ভূত বলে দাবি করেছন।
এছাড়া গত মার্চে পররাষ্ট্র দফতরের কর্মকর্তা অ্যানেলে শেলাইন পদত্যাগ করেন। তিনিও একই কারণ উল্লেখ করেন। সূত্র: আল-জাজিরা, ওয়াশিংটন পোস্ট, মিডল ইস্ট আই