বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এমপি বলেছেন, ‌‘বাংলাদেশের মানুষকে ভালো রাখার জন্য বঙ্গবন্ধু কন্যার ঐকান্তিক ইচ্ছা, প্রচেষ্টা, নিষ্ঠা, সততা ও ভালোবাসার যে নিদর্শন ও আন্তরিকতা এটি বিরল। আমরা যদি তার দিকে তাকিয়ে সবাই একটু একটু করে পরিবর্তন আনতে পারি তাহলে সে পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে দেশের মানুষের কল্যাণ সাধিত হবে।’

আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ম্যানেজিং কমিটির সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।নাছিম বলেন, আমরা চাই প্রতিটি মানুষই চিকিৎসা পাক। একজন মানুষও বিনাচিকিৎসায় মৃত্যুর মুখে পতিত হোক সেটি আমরা চাই না। এটি জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল। তিনি বৈষম্য দূর করার জন্য, মানুষের দরিদ্রতা কমিয়ে আনার জন্য ও চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার জন্য এবং মানুষের চাহিদাগুলো পূরণ করার জন্যই বাংলাদেশ স্বাধীন করেছেন। আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে চাই। তার সুযোগ্য কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা দেশের মানুষকে ভালো রাখার জন্য তার জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় ব্যয় করে যাচ্ছেন।’

ঢাকা-৮ আসনের এই সংসদ সদস্য বলেন, ঢাকা মেডিকেল ঢাকাসহ বাংলাদেশের সকল মানুষের চিকিৎসা পাওয়ার আস্থার জায়গা। বাংলাদেশের কোথাও যে রোগী চিকিৎসা পান না তিনিও ঢাকা মেডিকেল থেকে কখনো ফেরত যান না। নিজেদের সামর্থের মধ্যে ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মানুষের জন্য কাজ করেন। তবে রোগীরা যাতে আরো ভালো সেবা পান, ডাক্তার নার্সসহ চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট সবাইকে সেজন্য আরও সচেষ্ট হতে হবে।

তিনি বলেন, ১৯৪৬ সালে ঢাকা মেডিকেল ২৫০ শয্যা নিয়ে কর্যক্রম শুরু করে। ১৯৭৩ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকা মেডিকেল কলেজকে ১০৫০ শয্যায় উন্নীত করেন এবং ২০১৩ সালে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা ঢাকা মেডিকেল কলেজকে ২৬০০ শয্যায় উন্নীত করেন। বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ১২০টি আইসিইউ বেড আছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ যাতে আরো উন্নত ও বিস্তৃত চিকিৎসা সেবা দিতে পারে সেজন্য বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

বৈঠক শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ কেন্দ্রিক কোনো দালাল চক্র থাকবে না।  আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় তাদের নির্মূল করা হবে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গণে কোনো অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেট যাতে না থাকে সেজন্য ওয়ানস্টপ সার্ভিসের মাধ্যমে রোগীর চাহিদার ওপর ভিত্তি করে নির্ধারিত ভাড়ায় অ্যাম্বুলেন্স রোগী পরিবহন করবে। ঢাকা মেডিকেল যাতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে সেজন্য সরকারি বেসরকারি উদ্যোগে এবং এনজিওর সমন্বয়ে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চলবে। ঢাকা মেডিকেলকে ৫০০০ বেডে উন্নীতকরণের উন্নয়ন প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নে জোর দেওয়া হবে। এ ছাড়া হাসপাতালের শূন্য পদে নিয়োগ, নতুন পদ সৃষ্টি, হাসপাতালের মূল প্রবেশ মুখে হকার উচ্ছেদ, হাসপাতালের যুগপোযোগী পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ, স্বাস্থ্যকর্মীদের যাতায়াতের জন্য যানবাহনের ব্যবস্থা করাসহ নানা বিষয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ম্যানেজিং কমিটি কাজ করছে।

সভায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব, পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. শফিকুল আলম চৌধুরী, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিনিধি, সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রতিনিধিসহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।