নদ-নদীতে পানি বেড়ে যাওয়া ও বন্যার কারণে সিলেট জেলার সব পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করেছে প্রশাসন। বুধ ও বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসন বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ ঘোষণা দেয়।
সিলেটের উল্লেখযোগ্য পর্যটনকেন্দ্রগুলো হচ্ছে- কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাদাপাথর ও বিছানাকান্দি, গোয়াইনঘাটের জাফলং ও রাতারগুল এবং জৈন্তাপুরের লালাখাল।ভারি বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে সিলেটের অন্তত ৮টি উপজেলায় বন্যা হয়েছে। এর মধ্যে গোয়াইনঘাট, জকিগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও কোম্পানীগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ। বুধবার বিকাল থেকে এসব উপজেলায় হু হু করে বাড়তে শুরু করে পানি। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েন লাখো মানুষ। রাতে খবর পাওয়া যায়- অনেকের ঘরে গলা পর্যন্ত ঢুকে পড়ে পানি। অনেকের ঘর-বাড়ি তলিয়ে যায়। ভেসে যায় গবাদি পশু ও পুকুর-খামারের মাছ। এ অবস্থায় যে যেটুকু পারছেনে সেটুকু নিয়ে ছুটছেন নিরাপদ আশ্রয়ের খুঁজে।
কোম্পানিগঞ্জ উপজেলা পর্যটন উন্নয়ন কমিটির আহবায়ক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুনজিত কুমার চন্দ জানান, উপজেলার ধলাই নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং পর্যটন কেন্দ্রসমূহ পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সাদাপাথর পর্যটন ঘাটসহ সকল পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ বিষয়ে আজ (বৃহস্পতিবার) বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
জাফলং পর্যটন স্পট বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তৌহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন- গতকাল (বুধবার) এ বিষয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
এদিকে, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় নানা প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন। সূত্র জানিয়েছে, ইতোমধ্যে গোয়াইনঘাট, জকিগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ- এই ৫টি উপজেলায় মোট ২১৫টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এর মধ্যে গোয়াইনঘাটে ৫৬, জৈন্তাপুরে ৪৮, কানাইঘাটে ১৮, কোম্পানীগঞ্জে ৩৫ ও জকিগঞ্জে ৫৮টি। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে মঙ্গলবার বিকাল থেকে মানুষজন উঠতে শুরু করেছেন। এছাড়া বন্যাকবলিত লোকজনের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে ২০০ বস্তা করে মোট ১ হাজার বস্তা শুকনো খাবার, ১৫ মেট্রিক টন করে ৭৫ মেট্রিক টন চাল, ৫০ হাজার টাকা করে আড়াই লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে বরাদ্দ আরও বাড়ানো হবে।