যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করেছে নিউইয়র্কের একটি আদালত। তার বিরুদ্ধে ব্যবসায়িক নথিপত্র গোপন করে সাবেক এক পর্ণ তারকাকে অর্থ দেয়ার বিষয়ে আনা ৩৪টি অভিযোগে তিনি দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। তবে আদালত আগামী ১১ই জুলাই এ মামলায় সাজা ঘোষণা করবে। এর চারদিন পরেই রিপাবলিকান পার্টির সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য দলের মনোনয়ন দেয়ার কথা। এ নিয়ে যখন যুক্তরাষ্ট্রে নানা জল্পনার তৈরি হয়েছে, তখন প্রতিক্রিয়া জানালেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালতের রায় প্রদানের ঘটনায় কোনো উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেননি বাইডেন। সেই সঙ্গে রায় নিয়ে মাতামাতির পরিবর্তে নিজের দল ডেমোক্রেটিক পার্টির কর্ম-সমর্থকদের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মনোনিবেশ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।নিজে অবশ্য এ ইস্যুতে কিছুই বলেননি বাইডেন, তার প্রতিনিধি হিসেবে বিবৃতি দিয়েছেন আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির এই শীর্ষ নেতার তার নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা টিমের পরিচালক মাইকেল টেইলার এবং হোয়াইট হাউস মুখপাত্র ইয়ান স্যামস। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার আদালত রায় ঘোষণার কিছু সময় পর এক বিবৃতি টেইলার বলেন, ‘আজ নিউ ইয়র্কের আদালতে আরও একবার প্রমাণিত হলো যে কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়; কিন্তু আজকের রায় যুক্তরাষ্ট্রের জনগণকে সুন্দর ভবিষ্যতের পথে নিয়ে যেতে পারবে না।’
‘জনগণকে একটি সুন্দর ভবিষ্যত উপহার দিতে হলে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অবশ্যই ওভাল অফিসের (যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়) বাইরে রাখতে হবে। আর তা কেবল ব্যালট বাক্সের মাধ্যমেই সম্ভব।’
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনা ৩৪টি অভিযোগে তিনি দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। ব্যবসার নথিপত্র গোপন করে স্টর্মি ড্যানিয়েলস নামের এক পর্ন তারকার মুখ বন্ধ করতে ট্রাম্প অন্যায় করেছেন বলে জুরির সব সদস্য একযোগে তাকে দোষী হিসেবে গণ্য করেছেন। ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঠিক আগে ট্রাম্প এমন কুকীর্তি করেছিলেন বলে আদালতে অভিযোগ করা হয়েছিল। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সাবেক প্রেসিডেন্ট ফৌজদারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন নি।
উল্লেখ্য, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি মামলা চলছে। তবে নির্বাচনের আগে সে সব মামলায় চূড়ান্ত রায়ের আশা করা হচ্ছে না। এমন ‘ঐতিহাসিক’ ঘটনার ফলে যুক্তরাষ্ট্রে নানা রকম প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার আদালতের সিদ্ধান্ত এবং আগামী ৫ই নভেম্বর প্রেসিডেন্ট নির্বাচন পর্যন্ত অন্যান্য মামলায় অগ্রগতির পরিপ্রেক্ষিতে প্রশ্ন উঠছে, ট্রাম্প আদৌ নির্বাচনে প্রার্থী থাকতে পারবেন কিনা।
সেই বাধা না থাকলেও কারাদণ্ডের ক্ষেত্রে কোনো প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনে জিতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে কার্যভার গ্রহণ করা সম্ভব কিনা, সেই বিষয়টিও আইনি বিশেষজ্ঞদের ভাবাচ্ছে। বৃহস্পতিবারের ঘটনার পর আদালত আউন অনুযায়ী প্রতিটি অভিযোগের কারণে ট্রাম্পকে চার বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের রায় দিতে পারে। কিন্তু তাকে কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে না বলে অনুমান করা হচ্ছে।